আজ শনিবার, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বিতর্কের উর্ধ্বে গাজী,বাড়ছে গ্রহণ যোগ্যতা

নবকুমার :

গেল ৭ জানুয়ারি, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের মন্ত্রীত্ব গ্রহণের ৪ বছর পূর্ণ হয়েছে। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি হ্যাট্রিক বিজয় অর্জন করেন । এরপর ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি তিনি মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। খড়া কাটে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ থেকে মন্ত্রী হওয়ার। তিনি দায়িত্ব পান বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের । গত চার বছরে তিনি মন্ত্রী হিসেবে সফলভাবেই দায়িত্ব পালন করে আসছেন। রপ্তানি আয়ে পাটশিল্প চামড়াকে ছাড়িয়ে গেছে। তার গ্রহণ যোগ্যতা বাড়ছে। বন্ধপাটকলগুলো লিজ পদ্ধতিতে চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২৮২ প্রকার দৃষ্টিনন্দন পাটপণ্যকে বহুমুখী পাটজাত পণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে। দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। তার নেতৃত্বে সোনারগাঁ বিশ্ব কারুশিল্প শহরের স্বীকৃতি অর্জন করে।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম মন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ-১ ( রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। তিনি নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের গর্ব। মন্ত্রী হওয়ার চার বছরে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা , মহানগর ,উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে সু-সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। কারো সাথে বিরোধ করেননি। বিভিন্ন সময় তিনি জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুল হাই , সাধারণ সম্পাদক বাদল, মেয়র আইভী , মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন, এমপি শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু ,সেলিম ওসমান , লিয়াকত হোসেন খোকাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে মিটিং করেছেন। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। সবার সাথেই তার সু সম্পর্ক রয়েছে। জেলার রাজনীতিতে তার শক্তিশালী বলয় গড়ে উঠছে।
মন্ত্রী হিসেবে তিনি নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার মন্ত্রণালয়ে এমপি শামীম ওসমান এবং নজরুল ইসলাম বাবুকে আমন্ত্রণ করে নিয়েছিলেন। গোলাম দস্তগীর গাজী তার কর্মগুনে ২০২০ সালে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন। মন্ত্রী হওয়ার পর এটা তার দ্বিতীয় বড় সফলতা। এ সফলতা তিনি নারায়ণগঞ্জবাসীর ভালোবাসায় পেয়েছেন। তার শুভাকাঙ্খীরা তাকে সংবর্ধনা দিয়েছেন। মন্ত্রী হওয়ার পরে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। তার নেতৃত্বে গত রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ,ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিজয়ী হয়। কাঞ্চন পৌরসভায় প্রথম আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেয়র নির্বাচিত হয়েছে। দাউদপুরে আওয়ামী লীগের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলো না। তারাব পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় বিজয়ী হয়েছে। গেল ইউপি নির্বাচনে রূপগঞ্জে ৫টির মধ্যে ৪ টিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে। কায়েতপাড়া ছিলো তার মধ্যে অন্যতম চমক।
মন্ত্রী হিসেবে গত ৪ বছরে স্থানীয় প্রশাসনের উপর তার কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি । জেলা প্রশাসন ,উপজেলা প্রশাসন,পুলিশ প্রশাসনের তিনি আস্থা অর্জন করেছেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রশাসনের কর্মকর্তারা মন্ত্রীর প্রশংসা করেছেন। তার নামে নেই কোনো অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ। করোনাকালে তিনি রূপগঞ্জে গাজী পিসিআর ল্যাব স্থাপন করে নারায়ণগঞ্জ এবং এর আশেপাশের জেলার মানুষকে রক্ষা করেছেন। নারায়ণগঞ্জের মন্ত্রী হিসেবে তিনি তার দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি খাদ্য সামগ্রী এবং করোনা সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেন। ভুলতা ফ্লাইওভার , মুড়াপাড়ায় শীতলক্ষ্যা নদীর উপর বীর প্রতীক গাজী সেতু উদ্বোধন হয়েছে। রূপগঞ্জে সড়ক উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। মুড়াপাড়া কলেজ তিনি জাতীয়করণ করেছেন। তার সুফল পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া তিনি নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের সদস্য সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনের টানা ১৪ বছর পূর্ণ করেছেন। তিনি ২০০৮, ২০১৪,২০১৮ সালে আওয়ামীলীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। গাজী ছাড়া রূপগঞ্জে টানা এতদিন ক্ষমতায় থাকার রেকর্ড কারও নেই। ৪র্থ বার সংসদ সদস্য হওয়ার চেষ্টায় আছেন তিনি। দলের নেতাকর্মীরাও মন্ত্রীর পক্ষে । মানবিক কাজেও তিনি অধিক সক্রিয় রয়েছেন। তার নিজ নির্বাচনী এলাকা রূপগঞ্জ উপজেলার কিডনী রোগীদের জন্য বিনা খরচে তিনি কিডনী ডায়ালাইসিস ব্যবস্থা করেছেন। সাধারণ মানুষও বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে স্বাগতম জানিয়েছে। তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে মহিলা লীগ ও যুব মহিলা লীগ কে অত্যন্ত শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলেছেন তিনি। দল মতের উর্ধ্বে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি রূপগঞ্জ ছেড়ে যাননি। বিগত ১৪ বছর তাকে কর্মীদের পাশেই দেখা গেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এখনও তিনি রাজপথে সরব।